শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪২ অপরাহ্ন
শিরোনাম
লক্ষ্মীপুরে এক মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে পালক বাবা গ্রেফতার রায়পুরে প্রবীণ ও প্রতিবন্ধী অন্তর্ভুক্তিকরণে কর্মশালা অনুষ্ঠিত রায়পুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আরও ১ জনের মৃত্যু, নিহত ২, গ্রেফতার ২, বহিষ্কার ১৫ নেতাকর্মী লক্ষ্মীপুরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে যুবক আহত, ঢাকায় পাঠানো হয়েছে লক্ষ্মীপুরে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ২৩ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী লক্ষ্মীপুরে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, হত্যা মামলায় আসামি ২০০ শেখ হাসিনার ভূত এখনো দেশে আছে, এই ভূতের নাম সংবিধান: কবি ফরহাদ মজহার বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে উত্তপ্ত রায়পুরে ফের হামলা, অগ্নিসংযোগ লক্ষ্মীপুরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত এক , নেপথ্যে দখলদারিত্ব লক্ষ্মীপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে হামলা, আহত- ৩

সঞ্চয়পত্র সংগ্রহে প্রতারণার শিকার গ্রাহক, দশ কোটি টাকা নিয়ে পালিছে উদ্যোক্তা

রিপোর্টার / ৪২ বার দেখা হয়েছে
আপডেট মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে সঞ্চয়পত্র সংগ্রহে প্রতারণার শিকার হাজারও গ্রাহক। এরমধ্যে ১০ কোটি টাকা নিয়ে পালিছে উদ্যোক্তা আনোয়ার। এদিকে সময় মত টাকা না পেয়ে মেয়াদকালীন অর্থ সঞ্চয় করতে গিয়ে ভূয়া সঞ্চয়পত্র, ভূয়া চেক ও জাল স্বাক্ষরের ফাঁদে পড়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন সহস্ত্রাধিক গ্রাহক।

পুলিশ জানিয়েছেন, এ ঘটনায় আনোয়ারকে আসামী করে ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকিং ডিভিশন লক্ষ্মীপুর জেলা ব্যবস্থাপক নেয়ামত উল্যা বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর আদালতে প্রতারণা, চেক ডিজঅনার সহ ৩টি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ১২৬/২৪, ১৪৪/২৪, ১৯৫/২৪ইং। যা বর্তমানে পিবিআই এবং জেলা ডিবি অফিস কতৃক তদন্তাধীন রয়েছে।

রামগঞ্জ উপজেলা ডাকঘর অফিস সূত্র জানায়, রামগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড নরিমপুর গ্রামের বাঁশয়ালা বাড়ির মৃত আবু সাইদের ছেলে আনোয়ার হোসেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সুপারিশক্রমে রামগঞ্জ উপজেলা ডাকঘর অফিসে উদ্যোক্তা হিসেবে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের কাজ শুরু করে। এর কয়দিন পর আনোয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এশিয়ার অনুমতিক্রমে ডাকঘর অফিসে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহক একাউন্ট খোলার কাজের মাধ্যমে সহস্ত্রাধিক গ্রাহক সংগ্রহ করে।

এ সুযোগে আনোয়ার গ্রাহকদের ডাকঘর অফিস থেকে মেয়াদকালীন সঞ্চয়পত্র সংগ্রহ ডিপোজিট খোলার জন্য উৎসাহ প্রদান করে। এতে প্রায় সকল গ্রাহক তার লোভনীয় অফারে আনোয়ারের নিকট কয়েক লক্ষ টাকা জমা রেখে সঞ্চয়পত্র চাইলে আনোয়ার লক্ষ্মীপুর ডাকঘর অফিস থেকে সঞ্চয়পত্র এবং চেকের ফটোকপি এনে গ্রাহকদের হাতে ধরিয়ে দেয়। এরপর দু’এক মাস গ্রাহকের মোবাইলে লভ্যাংশের ম্যাসেজ গেলে পরবর্তীতে তা বন্ধ হয়ে যায়।

এ অভিযোগ রামগঞ্জ পৌর বাসিন্দা ফাতেমা আক্তারের। তিনি জানান, তার নিকট থেকে আনোয়ার ৫ লাখ টাকা নিয়েছিলো। এছাড়া ফাতেমার স্বামী কামাল উদ্দিন আহম্মদ এর নিকট থেকে ১০ লাখ টাকা নেয়া হয়।

আরও অভিযোগ রয়েছে, একই উপজেলার রামগঞ্জ পৌরসভার ইয়াছমিন আক্তারের নিকট থেকে ৪ লাখ, রাবেয়া বেগম থেকে নেয়া হয়েছে ৫ লাখ টাকা। এ সকল অভিযোগ নিয়ে প্রতিদিন পোষ্ট অফিসসহ ব্যাংক এশিয়া রামগঞ্জে ছুটে এসে গ্রাহকরা জানতে পারেন তাদের একাউন্টে কোন টাকাই জমা হয়নি।

কাগজপত্র যাচাই করে জানা গেছে, আনোয়ারের দেওয়া সঞ্চয়পত্রের ফটোকপি, চেকের ফটোকপি কোনটাই আসল নয়। গ্রাহকদের ধারণা রামগঞ্জ এবং লক্ষ্মীপুর ডাকঘর অফিসের পোষ্ট মাষ্টারের যোগসাজসে আনোয়ার এ অর্থ হাতিয়ে নেন। চলতি মাসে আনোয়ার নিখোঁজ হলে বিষয়টি এলাকায় প্রকাশ পায়। খোঁজ নিয়ে জানাযায়, সঞ্চয়পত্রের টাকা গ্রহণকালে প্রিন্ট ভাউচার দেয়ার নিয়ম থাকলেও আনোয়ার দিয়েছেন হাতে লেখা কাগজের রশিদ।

এ ব্যাপারে রামগঞ্জ উপজেলা ডাকঘর অফিস মাষ্টার মোঃ সিরাজ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, তাদের জমাকৃত টাকা পাওয়ার জন্য প্রতিদিন গ্রাহকরা রামগঞ্জ পোষ্ট অফিসে ধরণা দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ২০২৩ইং সনে রামগঞ্জে যোগদান করেছেন তিনি। তাই আনোয়ারের কর্মকান্ড সম্পর্কে তিনি তেমন অবগত নন। তার পূর্বে রামগঞ্জের দায়িত্বে ছিলেন জসিম উদ্দিন। তার সময়ে আনোয়ার লক্ষ্মীপুর জেলা পোষ্ট মাষ্টার ইউজার আইডি ব্যবহার করে সঞ্চয়পত্রের ফটোকপি এনে দিতেন গ্রাহকদের হাতে।

এদিকে রামগঞ্জ উপজেলা ডাকঘর অফিস পরিদর্শক ইমাম মেহেদী বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে ২০২৩ ইং রামগঞ্জে যোগদান করেছেন বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকিং ডিভিশনের লক্ষ্মীপুর জেলা ব্যবস্থাপক নেয়ামত উল্যা জানান, উপজেলা ডাকঘর অফিস থেকে যারা সঞ্চয়পত্র সংগ্রহ করবে মাস শেষে লভ্যাংশের টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংক (বাংলাদেশ ব্যাংক) থেকে সরাসরি গ্রাহকের একাউন্টে এসে জমা হবে। এমনটাই নিয়ম। কিন্তু যখন দেখলাম বিভিন্ন মাধ্যম থেকে দু’এক মাস গ্রাহকের মোবাইলে ম্যাসেজ যাচ্ছে তখনি নজরে আসে বিষয়টি। পরে ক্ষতিয়ে দেখা যায় গ্রাহকদের একউন্টে কোন টাকাই জমা হয়নি। সাথে সাথে রামগঞ্জ ব্যাংক কতৃপক্ষ কৌশলে আনোয়ারের পাসপোর্ট জব্দ করে। এতে আনোয়ার পালিয়ে যায়। পরে তার বিরুদ্ধে ৩টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ঔসব মামলায় গ্রেপ্তারি ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে।

রামগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবুল বাশার জানান, প্রতারণায় অর্থ আত্নসাতের ঘটনায় থানায় এখনো পর্যন্ত মামলা হয়নি। তবে আদালতে যে মামলা হয়েছে। সেই কাগজপত্র থানায় পৌঁছলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

লক্ষ্মীপুরখবর//এএইচ


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

আর্কাইভস

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১