শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০১:০১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
লক্ষ্মীপুরে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ২৩ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী লক্ষ্মীপুরে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, হত্যা মামলায় আসামি ২০০ শেখ হাসিনার ভূত এখনো দেশে আছে, এই ভূতের নাম সংবিধান: কবি ফরহাদ মজহার বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে উত্তপ্ত রায়পুরে ফের হামলা, অগ্নিসংযোগ লক্ষ্মীপুরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত এক , নেপথ্যে দখলদারিত্ব লক্ষ্মীপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে হামলা, আহত- ৩ লক্ষ্মীপুরে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বাবা’র ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ এ্যানি’র দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে তারেক রহমানের নেতৃত্বে: শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি রাজনৈতিক দলগুলো প্রস্তুতি নিক, নির্বাচন হবে: তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম জমি বিরোধ নিয়ে আতঙ্কে এক শিক্ষক পরিবার, সেনা সদস্যদের পরিদর্শন

লক্ষ্মীপুরে বন্যায় ক্ষতি ১৫’শ কোটি টাকা, তিন লাখ মানুষ পানিবন্দী

রিপোর্টার / ১০৯ বার দেখা হয়েছে
আপডেট শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরে বন্যায় ক্ষতি হয়েছে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে কৃষি ও মৎস্য খাতে ক্ষতি হয়েছে ৮৭০ কোটি টাকা। বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি। ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে সদর উপজেলায়। জেলায় নিঃস্ব হয়েছেন প্রায় তিন লাখ কৃষক। বন্যার এক মাস পার হলেও ২০ ইউনিয়নের ৩ লাখ মানুষ এখনো পানিবন্দী।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, গত ২০ বছরে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা ও জলাবদ্ধতা দেখেনি লক্ষ্মীপুরের মানুষ। ১ মাস পার হলেও অনেক এলাকা থেকে এখনো পানি সরে যায়নি। রাস্তাঘাট বাড়িঘর হাঁটু পর্যন্ত পানি তলিয়ে রয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় জানিয়েছেন, গত ১৭ আগস্ট থেকে শুরু হয় টানা বৃষ্টি ও বন্যা। এতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। পানিবন্দী হন ৫ উপজেলাবাসী। ভেসে যায় ৫০ হাজার পুকুর ও ঘেরের ২৫০ কোটি টাকার মাছ। তলিয়ে যায় আমনের বীজতলা, আবাদসহ ৬০ হাজার হেক্টর জমির ফসল। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় আরও জানায়, পানির তোড়ে ২’শ ব্রিজ-কালভার্ট এবং কাঁচা–পাকা ২ হাজার ৭৫০ কিলোমিটার সড়কের ৩৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। অপরদিকে নয় হাজার ৮৭০ কিলোমিটার বৈদ্যুতিক লাইন, ১০১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ৩০ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়, ১ লাখ ১৭ হাজার ৬৫৬টি গবাদিপশু ও বিভিন্নভাবে জেলায় বন্যায় ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। জেলায় ৭ লাখ ৫০ হাজার মানুষ ক্ষতির শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে পুঁজিসহ সব হারিয়ে নিঃস্ব প্রায় তিন লাখ কৃষক।

জেলার সদর উপজেলার চাঁদখালী গ্রামের খোকন হোসেন ও মোহাব্বত হোসেন জানান, ১ মাস পার হলেও এখনও পানিবন্দী। অর্ধাহারে-অনাহারে খেয়ে–না খেয়ে দিন কাটছে। এরই মধ্যে পানিতে পঁচে গেছে ঘরের আসবাব। ঘরের ভিটেমাটি ধসে গেছে। কোথাও মাথা গোঁজার আশ্রয় নেই। বন্যার পানিতে সর্বস্ব হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। চরম দুর্ভোগের মধ্যে থাকতে হচ্ছে তাদের। কবে নাগাদ পানি কমবে সে আশায় দিন কাটছে তাদের।

সদর উপজেলার বালাইশপুর এলাকার আদর্শ খামারের মালিক ফারুকুর রহমান বলেন, ‘চারটি পুকুর ও ঘেরের প্রায় ৫০ লাখ টাকার মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। গবাদিপশুর গোখাদ্য নষ্ট হয়েছে প্রায় ৫ লাখ টাকার। বন্যায় ক্ষতি ও ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। এই এলাকায় আমার মতো কয়েক হাজার খামারি নিঃস্ব হয়েছেন।’

৩০ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানান জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ইউনুছ মিয়া। তিনি বলেন, ‘এবারের বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সব মিলে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ক্ষতির শিকার প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষ। এর মধ্যে কৃষকই ৩ লাখ। এ ছাড়া জেলার ২০ ইউনিয়নের ৩ লাখ মানুষ এখনো পানিবন্দী। ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে মানুষের। কাজ করে যাচ্ছি।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. মঞ্জুর হোসেন বলেন, ‘আমন আবাদসহ মোট শস্যখেত রয়েছে ৯০ হাজার ৫৭৪ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে বন্যায় ক্ষতি হয়েছে ৫৮ হাজার ৩০০ হেক্টর জমির ফসল। যার ক্ষয়ক্ষতি ৬৩৩ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন করার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।’

জেলা প্রশাসক রাজিব কুমার সরকার বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে পুনর্বাসনের কাজ চলছে। এর পাশাপাশি খালগুলোর বাঁধ অপসারণ ও দুই পাড়ে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বহুতল ভবন উচ্ছেদ করে পানি চলাচল স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষি ও মৎস্য খাতে। সব মিলে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে এক হাজার ৬৯ টন চাল ও ৬৭ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।’ ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

 

লক্ষ্মীপুরখবর//এএইচ


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

আর্কাইভস

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০